কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে জুন মাসের ভিজিডি কর্মসুচীর চাল পায়নি প্রায় দুই শতাধিক সুস্থ, গরীব ও অসহায় নারী। চেয়ারম্যানের ডিও দিয়ে খাদ্য গোডাউন থেকে এ চাল উত্তোলন করা হলেও অসহায় নারীদের কপালে জোটেনি। গুদাম কর্মকর্তা বলছেন, চেয়ারম্যান জুন মাসে চাল উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন। কি কারনে তিনি বিতরণ করেননি তা তিনিই বলতে পারবেন। আর চেয়ারম্যান বলছেন, তিনিও বুঝে উঠতে পারছেন না উত্তোলনকৃত চাল কোথায় গেল খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় জেলার প্রত্যেক ইউনিয়নে দুঃস্থ, গরীব, অসহায় ও বয়স্ক নারীদের মাঝে প্রতি মাসে ৩০কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নে ২৪৯জন অসহায় নারী এ চাল পেয়ে আসছে। তবে সর্বশেষ জুন মাসে কেউ এ চাল পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। গুদাম থেকে চেয়ারম্যানের দেয়া ডিওতে চাল উত্তোলন করা হলেও সেই চালের কোন হদিস মিলছে না।
কুমারখালী উপজেলা খাদ্য গোডাউন সূত্র জানিয়েছে, প্রতি মাসেই চেয়ারম্যানরা তাদের ইউনিয়নের গরীব মানুষদের মাঝে বিতরণের জন্য ভিজিডির চাল উত্তোলন করেন। এ জন্য চেয়ারম্যানরা ডিও দিয়ে প্রতিনিধি পাঠান। সেই অনুযায়ী গোডাউন থেকে চাল দেয়া হয়। প্রতি মাসে ২৪৯ বস্তা করে চাল তোলা হয়। প্রতি বস্তায় চালের পরিমান ৩০ কেজি করে। চাপড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির হোসেন রিন্টুর দেয়া ডিও অনুযায়ী মে মাসের চাল উত্তোলন দেখানো হয়েছে ১১ জুন আর জুন মাসের চাল উত্তোলন দেখানো তিন দিন পরে ১৪ জুন। প্রতি মাসের চাল প্রতি মাসে উত্তোলন করার নিয়ম থাকলেও এক মাসে দুই মাসের চাল উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় প্রায় ১৫ টনের বেশি চাল উত্তোলন করে নিয়ে যায় চেয়ারম্যানের লোকজন। চাল উত্তোলন করা হলেও এ চাল কেউ পাননি। স্থানীয়দের অভিযোগ দুই মাসের চাল উত্তোলন করা হলেও এক মাসের চাল দিয়ে বিতরণ করে বাকি চাল আত্মসাতের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে। জানা গেছে, কয়েকদিন আগে চেয়ারম্যান ডিও দিয়ে জুন মাসের চাল উত্তোলনের জন্য লোক পাঠান। কিন্তু গুদাম কর্মকর্তা রাশেদ আহমেদ চাল উত্তোলন আগেই হয়েছে মর্মে প্রতিনিধিকে জানান। নতুন করে কোন চাল দেয়া যাবে না বলে তিনি জানিয়ে দেন। এরপর কাগজপত্র যাছাই বাছাই করে দেখা যায় এ চাল আগে তোলা হয়েছে। প্রায় ৮ মেট্রিক টন চাল উত্তোলন করা হয়েছে এ সময়।
কুমারখালী গুদাম কর্মকর্তা রাশেদ আহমেদ বলেন,‘ চেয়ারম্যান তাঁর ডিও’র মাধ্যমে জুন মাসেই মে ও জুনের চাল তুলে নিয়ে গেছেন। নথি বলছে দুই মাসের ৪৯৮ বস্তা চাল নিয়ে গেছেন তিনি। তিনি চাল তুলে কি করছেন তা তিনিই বলতে পারবেন। আমার অফিসে সকল কাগজপত্র রয়েছে। আর জুন মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা গুদাম পরিদর্শন এসে খামাল পরিদর্শন করেন। এরপর সকল কাগজপত্র দেখে তিনি গুদাম সিলগালা করে দেন। আমার এখানে কোন অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই।চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হাসান রিন্টু বলেন,‘ আমার ডিও অনুযায়ী চাল উত্তোলন হয়েছে, কিন্তু বুঝতে পারছি না চাল গেল কোথায় জরুরী মিটিং ডাকা হয়েছে। এরপর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এ বিষয়ে কি করা হবে।’কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিনুজ্জামান বলেন,‘ ভিজিডির চালের বিষয়ে কোন অনিয়ম পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।’
Leave a Reply