নেত্রকেনার কেন্দুয়া কেন্দুয়া উপজেলার নওপাড়া বাজার সংলগ্ন মুচি বাড়িতে হাত বাড়ালেই মিলে মাদক। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এই মুচি বাড়িতে মদ্য পানের জমজমাট আসর বসলেও সারাদিনই অবাধে কেনা বেচা হচ্ছে চোলাই মদ গাঁজা সহ অন্যান্য মাদক সামগ্রী। এতে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অভিযোগ ওঠেছে প্রায় ১ বছর আগে নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত ওপেন হাউস ডে ও পারস্পরিক মত বিনিময় সভায় নওপাড়া বাজার সংলগ্ন মুচি বাড়িতে হাত বাড়ালেই মাদক ও মাদকের জমজমাট আসর ভাঙ্গার জন্য দাবী তোলা হয়। দাবীর প্রেক্ষিতে সেদিন পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা মাদকের আসর ভাঙ্গার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানের কথা ঘোষনা করেন। কিন্তু এক বছরেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। নওপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি মো: আবুল কাশেম জানান, মাদকের এই আকড়া ভেঙ্গে দেয়ার দাবীতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটি সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে দাবী তোলা হয়েছে। কিন্তু সে দাবী দাবীই রয়েগেছে। তিনি বলেন, গত ৫/৬ মাসের মধ্যে আমরা বাজার কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে উপজেলা প্রশাসন ও থানা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। থানা থেকে মাঝে মধ্যে দুই একজন পুলিশের সদস্য এসে ঘুরে ফিরে চলে যান কিন্তু মাদকের আসর বন্ধ হয় না। তিনি বলেন, অবাধে এই মাদক বিক্রি ও জমজমাট আসরের ফলে এলাকার উঠতি বয়সের যুবকেরা বিপথগামী হচ্ছে। গত কয়েক বছরে অতিরিক্ত মদ্যপান ও মাদক সেবনের ফলে ৬ ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। এদের মধ্যে কান্দিউড়া ইউনিয়নের পালড়া গ্রামের জয়নাল, তারাকান্দি গ্রামের লাবু মিয়ার ছেলে ছাদেক, দিঘলকুষা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে ইদ্রিস, দিঘলকুষা গ্রামের জালাল, তারাকান্দি গ্রামের হক মিয়া ও কাউরাট ইটাচকি গ্রামের খোকন মিয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে। তবে লোক লজ্জার ভয়ে এসব অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরও পরিবারের সদস্যরা কোন আইনগত ব্যবস্থা নেননি। নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে প্রায় এক বছর আগে ওপেন হাউস ডে ও পারস্পরিক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় নওপাড়া বাজার সংলগ্ন মুচি বাড়ির বাবুলাল রবি দাস, গেন্দলাল রবি দাস ও চন্দন রবি দাসের বাড়িতে চোলাই মদ ও গাঁজার নিয়মিত আসর ভাঙ্গার দাবী তোলা হয়। এর পরবর্তীতে কোন প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা না হওয়ায় উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও ইউনিয়ন বাসীর পক্ষ থেকে মাদকের আসর ভাঙ্গার বিষয়ে দাবী তোলেছি। কিন্তু কোন প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা না হওয়ায় আমরা হতাশ। মাদকের আসরের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দুয়া থানার ওসি ইমারত হোসেন গাজী বলেন, নওপাড়া বাজারের মুচি বাড়িতে মাদকের নিয়মিত আসর বসে তা আমর জানা নেই। এ বিষয়ে আমাকে কেউ লিখিত ভাবে অভিযোগও দেননি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে তিনি জানান। এদিকে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শাহজাহান মিয়া বৃহস্পতিবার বিকালে মোবাইল ফোনে বলেন, নেত্রকোনা জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী মাদকের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। মাদকের সঙ্গে যদি কোন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, যেখানেই মাদক সেখানেই আমাদের অভিযান। নওপাড়া মুচিবাড়িতে মাদকের নিয়মিত আসর বসে এ বিষয়ে জরুরী ভাবে প্রতিকার মূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
Leave a Reply